মা তাড়াতাড়ি খাবার দাও আমার কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে, এভাবে দেরি করালে আমি কিন্তু ভার্সিটিতে যাব না скачать в хорошем качестве

মা তাড়াতাড়ি খাবার দাও আমার কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে, এভাবে দেরি করালে আমি কিন্তু ভার্সিটিতে যাব না

মা তাড়াতাড়ি খাবার দাও তো আমার কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে, এভাবে দেরি করালে আমি কিন্তু ভার্সিটিতে যাব না বলে দিলাম ।- আমার হয়ে গেছে রে মা, এই নে  খেয়ে তারপর যাবি। তোর বাবা তোর জন্য অপেক্ষা করছে। অফিসে যাওয়ার সময়  তোকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দেবে।তৃপ্তি মুচকি হেসে খাবাবের প্লেটটা নিলো। মেয়েটার ছটফটানো স্বভাব দেখে কে বলবে এই মেয়েটা কালকে ভেঙে চূড়মার হয়ে গেছে। মানুষ বলে না যে মন ভাঙার শব্দ তীব্র  হলেও অন্য কেউ শুনতে পায় না, তৃপ্তির হয়েছে তেমন।তৃপ্তি খাবার খাওয়া শেষ করেই বাবাকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বের হচ্ছে এমন সময় তৃপ্তির মা রাইসা এগিয়ে এসে তৃপ্তিকে ডাক দিলেন। - উফ মা, আবার কি হলো ? এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে।- এই যে আপনার আইডি কার্ড, এটা ছাড়া ঢুকতে দিবে? আবার তো ফিরে আসতে হবে।-আচ্ছা, আচ্ছা দাও এখন। লাভ ইউ মা,আসছি এখন।ভার্সিটির সামনে এসে গাড়ি থামলে তৃপ্তি গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে চলে গেল। এগিয়ে যেতেই  দেখলো ক্লাসরুমের সামনে বকুল গাছটির নিচে সিমি,নীরু মাহিন, সোহান সবাই বসে আছে। সোজা ওদের কাছে চলে গেল।তৃপ্তিকে দেখে সবাই এক প্রকার হতবাক হয়ে গেল। কারণ মাহির তো এখন বিছানায় পড়ে থেকে কান্না করার কথা, খাওয়া দাওয়া না করে দরজা বন্ধ করে নিজেকে ঘরবন্দী করার কথা- তৃপ্তি তুই এখানে? কথাটি বলে সোহান বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল।- কালকে ওই ঘটনার পর থেকে কি হয়েছিলো তোর? অনলাইনে ও আসিস নি, আমাদের কারো ফোন ও রিসিভ করিস নি তুই । (সিমি) তোরা অযথা আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করছিস কেন তোরা? কিছুই তো হয় নি।( তৃপ্তি) তৃপ্তি আমরা সবাই কিন্তু তোকে দেখে বুঝতে পারছি, তোর ভেতরে কি ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সবার কাছে সবকিছু লুকানো যায় না তৃপ্তি আমরা ভেবেছিলাম সবাই মিলে আজকে তোর বাসায় যাব। কিন্তু তুই তো এখানেই এসেছিস।(মাহিন)-তৃপ্তি হঠাৎ করে এরকম কেন হলো ? (নীরু) - আরে কিছু হয় নি, চল তো সবাই দেরি হয়ে যাচ্ছে ক্লাস শুরু হবে তো। (তৃপ্তি)- দেখ তৃপ্তি, তুই বাহিরে যা দেখাচ্ছিস  না আমরা সবাই সব জানি তুই এটা না। তুই তোর কষ্টটা আমাদের সাথে শেয়ার কর প্লিজ, তোর কষ্ট একটু হলেও কম লাগবে।(সোহান)-  তোরা কি যাবি ক্লাসে? আমার একটুও ইচ্ছে করছে না এসব নিয়ে কথা বলতে । (তৃপ্তি) তৃপ্তি চলে যেতে লাগলে সিমি মাহির হাত টেনে ধরলো ।তৃপ্তি পিছনে ঘুরে তাকাতেই সবাই খেয়াল করলো তার চোখ টলমল করছে । সিমি আস্তে করে তৃপ্তিকে জড়িয়ে ধরলো। সে আর নিজেকে সামলাতে না পেরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।  নীরু তৃপ্তির হাত ধরে পুকুরপাড় নিয়ে যাচ্ছে, সিমি, সোহান, মাহিন ও আসছে। তৃপ্তি যদি ওখানে দাড়িয়ে এভাবে কান্নাকাটি করে তাহলে অনেকে জড়ো হয়ে যাবে।সবাই দাড়িয়ে আছে, আর মাহি নিচে বসে কেঁদেই চলেছে । কোন কিছুতেই তার কান্না থামছে না ।কিছুক্ষণ পর কান্না থামিয়ে তৃপ্তি বলল আমি আর এখানে থাকবো না রে । আমি ভেবেছি বাবাকে বলব আমাকে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিতে। - তৃপ্তি তুই আমাদের ছেড়ে থাকতে পারবি ? (নীরু)-আমি অন্য কোথাও গেলে তোদের সাথে আমার যোগাযোগটা থাকবে। কিন্তু তোরা বল প্রতিদিন আমি ওই মানুষটার মুখ কি করে দেখব? উনাকে দেখলেই যে আমি নিজেকে সামলে রাখতে পারব না। আমার হৃদয়টা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। আমি যে শারীরিকভাবে বেঁচে থাকলেও মানসিকভাবে কালকেই মা*রা গিয়েছি।(তৃপ্তি)- বুঝলাম না উনি হঠাৎ করে এরকম কেন করলো! উনার কথাবার্তা, ব্যবহার, যত্নে সবকিছু দেখেই তো বোঝা যেত  উনি তোকে ঠিক কতটা পছন্দ করে। আমার মাথায় এখনও ঢুকছে না উনি হঠাৎ করে এমন কেন করলেন! মানে সোজা.. (মাহিন)-প্লিজ মাহিন আর বলিস না প্লিজ, আমার আর সহ্য হচ্ছে না এসব শুনতে।(তৃপ্তি) ক্লাস শেষ করে, তৃপ্তি বাহিরে দাড়িয়ে আছে তার  ভাইয়া আসবে বলে । সামনে বাইক থামলে খেয়াল করে আয়ান সামনে বাইকে বসে। এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে না দেখে জিজ্ঞেস করলো কেউ কি আসবে? নাকি আমার সাথে বাসায় যাবি?- না আয়ান ভাইয়া আপনি যান । রিয়াদ ভাইয়া আসছে । ওর সাথে আবার আমাকে শপিং করতে যেতে হবে, বউমনি ও আসছে ।-রিয়াদ ভাইয়ার বিয়ে কবে রে ? -সামনে মাসের পাঁচ তারিখে।-ওহ আজকে তো একুশ তারিখ। আচ্ছা থাক তাহলে আমি বরং যাই, ভাইয়া যেহেতু আসছে। কথাটি বলে আয়ান চলে গেল ।কিছুক্ষণ পর তৃপ্তির ভাই এসে গাড়ি থামিয়ে বলল তাড়াতাড়ি ওঠ, তোর বউমনি আমাদের জন্য দাড়িয়ে আছে । -ভাইয়া, আমি না গেলে হয় না?-এখন উল্টা পাল্টা কথা বলিস না তো, দেরি হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি চল ।  তৃপ্তি আর কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে উঠে বসলো।  বিকেল থেকে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। রাত আটটা বাজে  এখনও যেন শেষ হচ্ছে না। কোনকিছুই যেন আর ভলো লাগছে না তার। একটা বিয়ের বিষাদ নিয়ে কি করে আরেক টা বিয়ের আনন্দ উপভোগ করবে সে! হৃদয়, মন যেটাই বলা হোক না কেন, সেটা কিছু কিছু সময় নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। চাইলেই হাত, পা, চোখ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, কিন্তু হৃদয়! যা কখনই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকে না।বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত প্রায় দশটা। তৃপ্তি বাড়ি ফিরেই নিজের রুমে চলে গেল। মাকে নিষেধ করে দিলো আবার খেতে যেন না ডাকে ফ্রেশ হয়ে এসে ফোন হাতে নিতেই দেখে  পরিচিত নম্বর থেকে কল। তৃপ্তি  দেখে আর ভাবে এই ভদ্রলোক এখন আর কি চায়, আর কি বাকি আছে ! কি ভেবেছে আমি কিছুই জানি না? আবার কোন মুখে আমাকে ফোন দিয়েছে সে!