Скачать с ютуб রাজশাহীর বিখ্যাত আমের বাজার বানেশ্বর। Baneshwar Is The Famous Mango Market Of Rajshahi Bangladesh в хорошем качестве

রাজশাহীর বিখ্যাত আমের বাজার বানেশ্বর। Baneshwar Is The Famous Mango Market Of Rajshahi Bangladesh

সরবরাহ বাড়ায় জমে উঠছে রাজশাহীর বানেশ্বর আমের হাট। মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শেষ দিকে গোপালভোগ, হিমসাগর (ক্ষীরশাপাত), ল্যাংড়া, রানিপছন্দ, লখনাসহ বিভিন্ন গুটি জাতের আমে ভরপুর হয়েছে হাটটি। কাঠফাটা রোদেও হাটে দেখা মিলেছে পর্যাপ্ত ক্রেতা-বিক্রেতার। সবমিলিয়ে বেশ জমে উঠেছে বানেশ্বর হাটের আম বাণিজ্য। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই হাটটি খুচরা ও পাইকারি দরে আম কেনাবেচার জন্য বেশ বিখ্যাত। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশেই হাটটি বসার কারণে এখান থেকে দেশের সব জায়গায় আম সরবরাহ হয়ে থাকে। মানভেদে এসব আম বেশ ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান হাটের খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। বিক্রেতারা জানান, আমের আকার ও স্বাদভেদে মণপ্রতি গোপালভোগ আম ২২০০-২৫০০ টাকা, হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাত ১৮০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গোপালভোগ আম শেষের পথে হওয়ায় দু-তিন দিন পর এটি ৩ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে। অন্যদিকে জাত-আকার ও স্বাদভেদে লক্ষণভোগ বা লখনা মণপ্রতি ৫০০-১০০০ টাকা, রানিপছন্দ ৮০০-১৫০০ টাকা, আচারি আম ৫০০-৭০০ টাকা ও বিভিন্ন গুটি জাতের আধাপাকা আম ৮০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এসব বিভিন্ন জাতের আম আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে আমের আবাদ ও উৎপাদন দুটোই ভালো। তবে এখানেও মুখভার আমচাষি ও সাধারণ ক্রেতাদের। আমচাষিদের অভিযোগ, তারা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। ৪০ কেজিতে মণ হলেও বরাবরের মতো বানেশ^র আমের হাটে ৪৮ কিংবা ৫২ কেজিতে অতিরিক্ত আম ঢলন হিসেবে নিচ্ছেন ফড়িয়ারা। এতে অনেকটায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। আবার অনেকেই সরকার দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় ভালো আম পেলে জোরপূর্বক কম দামে নিচ্ছেন কিংবা বাকিতে আম নিয়ে নিচ্ছেন। আমচাষি রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘আগের বছরের তুলনায় এবার আমের উৎপাদন ও দাম ভালো। করোনার সময় আমার অনেক লোকসান হয়েছে। আম কেনার কেউ ছিল না, আম নিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। আর এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি। বাজারে আমের ক্রেতাও বেশি, চাহিদাও বেশ। তবে ফড়িয়াদের হয়রানিতে কিছুটা লোকসান হচ্ছে। তারা আমাদের কাছে ঢলনেও বেশি নিচ্ছে, আবার বাকিও রাখছে। তাতে আমাদের খুব ক্ষতি হচ্ছে।’ দুর্গাপুরের আমচাষি আবির আহম্মেদ বলেন, পুঠিয়ার বানেশ্বর হলো রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম। এখানে দুর্গাপুর, বাগমারা, বাঘা, চারঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলার আমচাষিরা আসেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার বড় পাইকাররা এখান থেকেই আম সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তিনি বলেন, গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাত, ল্যাংড়া ও রানিপছন্দ আম বাজারে আসার পর থেকে দু-তিন ধরে বাজারে প্রচুর খুচরা ও পাইকারি ক্রেতা আসছেন। আজ (রোববার) যে পরিমাণ আম বিক্রি হচ্ছে আগামী পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে এই হাট আরও জমজমাট হয়ে উঠবে। ওই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ ল্যাংড়া, আমরুপালি, ফজলি, কাটিমন, সুরমা ফজলিসহ প্রায় সব ধরনের আম বাজারে মিলবে। তাই স্বাভাবিকভাবে ক্রেতার সংখ্যাও থাকবে বেশ। কথা হয় বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের পরেই বানেশ্বর বাজার। প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার আম কেনাবেচা হয় এখানে। করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দুই বছর বাজার সেভাবে জমেনি। বাজারে আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা এবার বেশ উৎফুল্ল। আর এ বছর গতবারের তুলনায় মণপ্রতি আমের দাম ৫০০ টাকা বেড়েছে। এতে ব্যবসায়ী ও আমচাষিরা বেশ আনন্দিত। মণপ্রতি অতিরিক্তি আম বা ঢলন নেওয়া ও জোরপূর্বক আম বাকিতে নেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো অভিযোগ আমি এখন পর্যন্ত পায়নি। যদি কারও এমন অভিযোগ থেকে থাকে তবে আমি তা উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে সমাধান করব। ঢলন ও জোরপূর্বক আম নেওয়ার ব্যাপারে জানতে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছকে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও কোনো সাড়া মেলেনি। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, এ বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিকটন আম। জেলার সিংহভাগ আম বানেশ্বর হাটেই কেনাবেচা হয়। আশা করা যাচ্ছে, এসব আম দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকায় কেনাবেচা হবে। #mango #market #mangorecipe #rajshahi