শীতকালীন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মুফতি আবু উমার রকীব। Abu Umar Rakib | The Muslim Journey скачать в хорошем качестве

শীতকালীন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মুফতি আবু উমার রকীব। Abu Umar Rakib | The Muslim Journey

শীতকালে বিশেষ কিছু ইবাদতের গুরুত্ব শীতকাল এমন এক মৌসুম, যা ইবাদতের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এই ঋতুতে দিন ছোট এবং রাত দীর্ঘ হয়, যা রোজা রাখা ও তাহাজ্জুদ পড়ার মতো ইবাদতগুলোকে সহজ করে তোলে। তাছাড়া, শীতকালের ঠাণ্ডা আবহাওয়া অজু করা ও গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের অন্তরে করুণা জাগ্রত করে। তাই শীতকালকে ইবাদতের জন্য বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়। ১. রোজা রাখা শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় রোজা রাখা তুলনামূলক সহজ হয়। মহানবী (সাঃ) শীতকালকে "মুমিনের বসন্তকাল" বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এই সময়ে দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে সহজ এবং রাত বড় হওয়ায় তাহাজ্জুদ পড়া সহজ। রমজানের বাইরে নফল রোজা যেমন সোমবার- বৃহস্পতিবার, আয়ামুল বীদ (চাঁদের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোজা) রাখা এ সময়ে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। ২. তাহাজ্জুদ পড়া শীতকালের দীর্ঘ রাত তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য এক দারুণ সুযোগ। তাহাজ্জুদ এমন একটি ইবাদত, যা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে অনন্য। রাতে দেরি করে ঘুমানো এবং ঠাণ্ডার কারণে অনেকেই এই ইবাদতে অবহেলা করে, কিন্তু যে ব্যক্তি এই সুযোগ কাজে লাগায়, তার জন্য রয়েছে অসীম পুরস্কার। কোরআনে আল্লাহ বলেন, "তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে পৃথক থাকে; তারা তাদের রবকে ডাকে ভয় ও আশা নিয়ে।" (সূরা আস-সাজদা, ৩২:১৬) ৩. অজুর প্রতি যত্নশীল হওয়া শীতের ঠাণ্ডা পানিতে অজু করা কঠিন হলেও এটি একটি বড় সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি ঠাণ্ডার সময়ে সম্পূর্ণভাবে অজু করে, তার জন্য রয়েছে জান্নাতের দরজা খুলে যাওয়ার সুসংবাদ।" (মুসলিম) তাই শীতের সময় অজুকে অবহেলা না করে বরং ধৈর্য ও আন্তরিকতার সাথে তা সম্পন্ন করা উচিত। ৪. গরিবদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শীতকালে দরিদ্র মানুষদের জন্য শীত নিবারণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইসলামে মানবসেবাকে ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, "তোমরা সৎকর্ম হিসেবে যা কিছু করো, আল্লাহ তা জানেন।" (সূরা আল-বাকারা, ২:২১৫) শীতবস্ত্র বিতরণ, গরম খাবারের ব্যবস্থা করা এবং গরিব-দুঃখীদের শীত নিবারণে সহায়তা করা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক বড় মাধ্যম। ৫. আল-কোরআন ও জিকিরের প্রতি মনোযোগ শীতের দীর্ঘ রাতগুলোতে আল-কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরের জন্য সময় বের করা অত্যন্ত সহজ। কোরআনের সাথে সময় কাটানো আমাদের আত্মাকে প্রশান্তি দেয় এবং ঈমানকে মজবুত করে। উপসংহার শীতকাল আমাদের জন্য ইবাদতের সুবর্ণ সময়। রোজা রাখা, তাহাজ্জুদ পড়া, অজু করা এবং গরিবদের সাহায্য করার মতো কাজগুলো আমাদের নেক আমল বাড়িয়ে দিতে পারে। আল্লাহ আমাদের এই সুযোগগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানোর তাওফিক দিন।