উত্তাল মার্চের ইতিহাস| যেই ঘটনা আমাদের জানানোই হয় নি| March 1971| History of Bangladesh| Shahedin скачать в хорошем качестве

উত্তাল মার্চের ইতিহাস| যেই ঘটনা আমাদের জানানোই হয় নি| March 1971| History of Bangladesh| Shahedin

উত্তাল মার্চের ইতিহাস| যেই ঘটনা আমাদের জানানোই হয় নি| March 1971| History of Bangladesh| Shahedin জাতি হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় কষ্টের জায়গা বোধ হয় এইটাই যে, আমাদের ইতিহাস নিয়ে আমাদেরকেই কনফিউজ থাকতে হয়। রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্য দিয়ে পালটে যায় জাতির রূপকারদের নাম। বিশেষ কাওকে স্থান দিতে আড়াল করা হয় বহুজনকে। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটা ঘটনা যেকোন জাতির জন্যই গৌরবের অনুসংগ হয়ে থাকে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি যেই ঘটনা বারবার বার্তা দেয় যে, “আমরা হেরে যাওয়া জাতি নই, আমরা কখনোও কারোও কাছে মাথা নত করি নি।’ বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে এমন অনেকগুলো ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে গৌরবের ঘটনাটাই বোধ হয় - ‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ।’ কতশত মানুষের চেষ্টা, স্বপ্ন, সাহস আর ত্যাগের ফল আমাদের আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু ইতিহাসের সেই সকল গুরুত্বপূর্ণ মানুষদেরকে কি আমরা মনে রেখেছি? বা রাখতে পেরেছি। যদি আরোও ভাঙ্গে বলি, সবাইকে কি মনে রাখতে দেওয়া হয়েছে? উত্তর হচ্ছে- না। মুক্তিযুদ্ধের একদম চূড়ান্ত পর্যায়ের শুরু ধরা হয় ৭১ এর মার্চ থেকে। কিন্তু মার্চের সেই উত্তাল সময় তৈরী হতে সময় লেগেছে অনেক বছর। রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনের পাশাপাশি বহু মানুষই দেশের স্বাধিনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। রাজশক্তির বিপক্ষে গিয়ে কেও কেও সেই স্বপ্নের কথা প্রচারও করেছিলেন। সাধারণত আমরা বই পুস্তকে যেমনটা জেনে এসেছি যে, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল মেনে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ বন্ধের ঘোষণা যখন আসে, তখনই বাংলার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এরপর, ৭ই মার্চের ভাষণ ও ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণার আলোচনা দেখানো হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই ছাত্র সংগঠন গুলোর দ্বারা এমন কিছু বিষয় ঘটে যায়, যা ইতিহাসে ঐভাবে স্থান পায় নি। আগামী কয়েকটা ভিডিওতে ১৯৭১ সালের মার্চে ঘটে যাওয়া এমন কিছু ঘটনা জানাব, যেটা পাঠ্যপুস্ককে স্থান পায় নি।মূলত স্থান দেওয়া হয় নি। পুর্ব ঘোষনা অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ইয়াহিয়া খান কোন রাখঢাক না রেখেই ১ মার্চ সেই অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত ঘোষনা করে দেন। ইতমধ্যেই অধিবেশনে যুগ দিতে নির্বাচিত নেতারা ঢাকায় এসে অবস্থান করছিলেন। ইয়াহিয়া খানের ঘোষনার পর, ঢাকার জনতা ব্যাপক ভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ গুলো থেকে শিক্ষার্থিরা রাস্তায় নেমে আসে। শ্রমিকরা কারখানার কাজ বন্ধ করে বেরিয়ে আসে রাজপথে। সারাবাংলায় শুরু হয় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। এদিন সবচেয়ে সাহসী ও যুগান্তকারী ঘটনা ঘটায়, দেশের ছাত্রসমাজ। এমন উত্যপ্ত সময়ে তারা ঘোষণা করে ‘স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। নামটা খেয়াল করেন, স্বাধীন বাংলা। দীর্ঘদিনের বঞ্চনার মধ্যেও যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো সরাসরি স্বাধীনতার কথা বলে নি। সেখানে ছাত্র সমাজ সেটা বলে ফেলেছে। যেই পরিষদের ব্যানারে এসে যোগ দেয় নানা মতের ও নানান আদর্শের মানুষ। শুধু পরিষদের নাম ঘোষণা করেই ক্ষান্ত থাকে নি। এই সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক নুরে আলম সিদ্দিকী ঐ দিন বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাতকারে স্পষ্ট ভাবেই বলে দেন- ‘পাকিস্তানের জন্মের প্রসুতিলগ্ন থেকে জাতি হিসেবে বাঙ্গালিকে ২৪ বছর ধরে যে নির্মম শোষণ করা হয়েছে, শাসনের নামে যে অত্যাচার করা হয়েছে, গণতন্ত্রের সকল পথ যেভাবে রুদ্ধ করা হয়েছে, তাতে অন্য কোনও পথ না পেয়ে বাঙ্গালিরা মুক্তির জন্য স্বসস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে।’ মানে বক্তব্যটা খেয়াল করলে বুঝবেন, একদম মার্চের এক তারিখেই জনতাকে সামনে রেখে, বৈশ্বিক মিডিয়া মারফত সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বাঙ্গালীরা স্বসস্ত্র বিপ্লব শুরু করেছে। স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম শুরু করে দিয়েছে। এবং সারাদেশের মানুষকে এই বার্তা টি দিয়ে দেয় যে, ছাত্র সমাজ আর পরাধীন থাকতে চায় না। ছাত্রসমাজ স্বসস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাকে স্বাধীন করতে চায়। পরদিন যখন দেশী বিদেশী পত্রিকায় এই খবর প্রকাশিত হয়, তখন দেশের আপামর জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার ক্ষুধা বাড়তে থাকে। আপনি চিন্তা করে দেখেন, একটা ছাত্র সংগঠন যারা, পাকিস্তানের কতৃত্ববাদী শাসকের রক্তচক্ষুর ভয় না করে স্বাধীন বাংলা শব্দ উচ্চারণ করে ও ছড়িয়ে দেয়, সেই সাথে বাঙ্গালীর স্বসস্ত্র বিপ্লবের ঘোষণাও দিয়ে দেয়। এইটা কম সাহসের কথা না। তো সেই সময়ের, সেই উত্তাল সময়ের ছাত্র নেতারা ছিলেন, নুরে আলম সিদ্দিকি, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, আ স ম আব্দুর রব ও শাহজাহান সিরাজ। যাদের বক্তব্য, জনগণকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা, অদম্য সাহস বাংলার মুক্তিকামী মানুষকে আশা দেখিয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় সেই নেতারা আজ কোথায়? ঠিক কি কারণে সেই স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আজ অবহেলিত। কেন সেই পরিষদের সদস্যদের নাম আজ শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হয় না? কেন ধুলো পড়ে গেছে এমন সব ইতিহাসে? সেটা কি ভেবে দেখেছেন। এককথায় উত্তর- রাজনীতি ও ক্ষমতার স্বার্থ। এটিই হয়ত আমাদের ছাত্রনেতাদের নিয়তি। সাহস নিয়ে দাঁড়াবে তারা, মৃত্যুর ঝুঁকি নেবে তারা, রক্তও দেবে তারা কিন্তু যেই ইতিহাস তারা তৈরি করবে, পরবর্তিতে সেই ইতিহাস থেকেই তারা হারিয়ে যাবেন স্মৃতির অতলে। #history_of_bangladesh #march_1971 #history_of_bangladesh_liberation_war #war_1971 #বাংলাদেশের_মুক্তিযুদ্ধের_ইতিহাস #১৯৭১_সালের_মার্চের_ঘটনা #১_মার্চ_কি_কি_ঘটেছিলো #সরল_কথন #শাহিদিন #কামরুল_হাসান_শাহিদিন #স্বাধীনতা_যুদ্ধের_সময়_চার_ছাত্রনেতা #shahedin #sorol_kotha #sorol_kothak #kamrul_hasan_shahedin