চৈতী হাওয়া: কাজী নজরুল ইসলাম।কবিতার বিশ্লেষণ।ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষ।। скачать в хорошем качестве

চৈতী হাওয়া: কাজী নজরুল ইসলাম।কবিতার বিশ্লেষণ।ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষ।।

'চৈতী হাওয়া' : একটি অচরিতার্থ প্রেমের কবিতা কাজী নজরুল ইসামের নামের আগে ' বিদ্রোহী কবি' এই ট্রেডমার্ক উপাধিটি চিরদিনের জন্য মুদ্রিত হয়ে আছে।তবুও নজরুলের কাব্যপাঠকমাত্রই স্বীকার করবেন যে, নজরুল বিদ্রোহী কবি যতটা সত্য,ঠিক ততটা সত্য তিনি প্রেমের কবি।কোনো কোনো বিশ্লেষক এমনো মন্তব্যও করেছেন  যে,নজরুল আংশিক বিদ্রোহী,পুরোটাই প্রেমিক।নজরুলের বিদ্রোহ প্রেমপ্লাবিত আর প্রেম, একূলওকূল- দুকূলপ্লাবী। নজরুলের বিস্ফোরক কবিতা 'বিদ্রোহী'র মধ্যেই তো পাই, 'মম একহাতে  বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ তূর্য।' যৌবনেরর যে দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য - বিদ্রোহ আর প্রেম, দুটোই নজরুলের কবিতায় সমানভাবে মু্দ্রিত। আমরা যদি ১৯২৯ সালে কোলকাতা এলবার্ট হলে সংবর্ধিত ব্যক্তি হিসেবে  দেয়া নজরুলের অভিভাষণটি পড়ি, তাহলে দেখবো, তিনি বলছেন- 'বন্ধুগণ,আমাকে বিদ্রোহী বলে খামোখা লোকের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছেন কেউ কেউ।........ বিশ্বাস করুন,আমি কবি হতে আসিনি।আমি প্রেম দিতে এসেছিলাম,প্রেম নিতে এসেছিলাম।সেই প্রেম পেলাম না বলে নীরবে ও অভিমানে চিরদিনের জন্য বিদায় নিলাম।" এই নীরব অভিমানের কবিতা 'চৈতী হাওয়া।' ড. আহমদ শরীফ নজরুল-কাব্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলছেন," একই হৃদয়বৃত্তির দুটি দিক;উচ্ছ্বাস উদ্দীপনায় ঝাঁপিয়ে পড়া আর কেঁদে লুটানো।আগুন জ্বালানো আর অশ্রুঝরানো।" এই কেঁদে লুটিয়ে পড়া আর অঝর অশ্রুপাতের কবিতা  'চেতী হাওয়।' স্বরবৃত্ত ছন্দে লেখা 'ছায়ানট' কাব্যগ্রন্থভুক্ত 'চেতী হাওয়া' পনেরো স্তবকে বিভক্ত। প্রতি স্তবকে ছয় পঙক্তি করে মোট নব্বই পঙক্তির এক দীর্ঘ কবিতা,-যার প্রতিটি পঙক্তিতে কবি স্মৃতির মালা গেঁথেছেন,নিজেকে,নিজের ভাবনাগুলোকে স্মৃতির হাতে সমর্পণ করেছেন।চৈত্রমাসের বসন্তপ্রকৃতিতে খুঁজে পাওয়া প্রেয়সীকে ওই চৈত্রমাসেই হারিয়ে ফেলেছেন।আর খুঁজে পাননি।প্রেয়সীর জন্মদিনে নিদ্রাহীন,অস্থির,বিধ্বস্ত কবি কবিতাজুড়ে হাহাকার ও দীর্ঘশ্বাস ছড়িয়েছেন আর তা সঞ্চারিত করে দিয়েছেন লক্ষ পাঠকেের হৃদয়ের নরম কোণে। এই না পাওয়ার বেদনার্ত কাব্যিক  উপস্থাপন 'চৈতী হাওয়া।' (কবিতাটির ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ রয়েছে ভিডিওতে।)