পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য তিনি ।মাত্র ১৬ বছর ২২৩ দিন বয়সে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাঁপিয়েছেন । скачать в хорошем качестве

পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য তিনি ।মাত্র ১৬ বছর ২২৩ দিন বয়সে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাঁপিয়েছেন ।

বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের ডাগআউটে মুখ ভার করে বসে থাকা কোচ তালহা জুবায়ের এখন ক্রিকেটপাড়ায় কোচ হিসেবে এক পরিচিত নাম। তিনি যে একসময় বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন, সেটি অনেকেরই জানার কথা আবার কেউ নাও জানতে পারেম। তাই ভাবলাম এই ফাস্ট বোলারের গল্পটা নিজের জ্ঞান মোতাবেক বলি, আশা করি পড়লে হতাশ হবেন না। লেখাটা কিছুটা লম্বা হয়েছে দেখে ক্ষমাপ্রার্থী। ✨ তালহার গল্প শুরু করা যাক একটি রেকর্ড দিয়ে—তিনি টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া বিশ্বের সপ্তম কনিষ্ঠ ক্রিকেটার। মাত্র ১৬ বছর ২২৩ দিন বয়সে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা রেখেছিলেন তিনি। অথচ তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার টিকেছে মাত্র আড়াই বছর! যখন ১৩তম বা শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন, তখন তার বয়স মাত্র ১৯ বছর ১০ দিন। ভাবা যায়? যে বয়সে একজন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার কথা, যে সময়টায় হয়তো অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অংশ হওয়ার কথা, সেই বয়সেই তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি ঘটে! উল্লেখ্য, সম্ভাবনাময় এই পেসার কিন্তু ২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। কখনো যদি তালহার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ আসে, তাকে আমি এই প্রশ্নটাই করবো— আসলে কতটুকু খারাপ লাগে এত ছোট বয়সেই নিজের ক্যারিয়ারটা শেষ হতে দেখে? তালহা কতটা সম্ভাবনাময়ী ছিলেন, তার প্রমাণ আমি নিচের দুটো প্রতিবেদনের চুম্বক অংশ নিয়েই বলি। ১. ক্যারিবীয় কিংবদন্তি স্যার অ্যান্ডি রবার্টস সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বাংলাদেশে বোলিং কোচের দায়িত্ব পালনকালে তালহা নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "তালহা খুব দ্রুতই ৯০ মাইল গতিতে বল করা এক প্রকৃত ফাস্ট বোলার হয়ে উঠবে। আমি ওর মধ্যে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখেছি।" ২. কৌশিক (মাশরাফি) ও তালহার গতি দেখে চমকে গিয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। তিনি সাময়িক ব্যাটিং কোচ হিসেবে এসেছিলেন এবং বিকেএসপির নেটে ও ইনডোরে সেশন পরিচালনা করছিলেন। সেই সময় তালহা ও কৌশিক আগুন ঝরানো বোলিং করছিলেন, বেশ কয়েকবার তাদের আক্রমণাত্মক ডেলিভারি ব্যাটারদের গ্লাভসে আঘাত হানে। এই জুটি প্রায় ৮৫ মাইল গতিতে বল ছাড়ছিল! ✨ অর্থাৎ তালহা জুবায়ের ১৭ বছরেই ১৩৮ কিমি/ঘণ্টা তে বল করতেন আর তার সম্ভাবনা ছিলো ১৪৫ ছুঁয়ার। তবে তালহা জুবায়েরের ক্যারিয়ারটা মূলত লম্বা হয়নি, ইঞ্জুরির জন্য, পেসারদের বড় শত্রু যাকে বলে আরকি। ওই ছোট্ট বয়সে এত চাপ নেওয়ার মত তার শরীর ছিলো না, সেজন্যই ইঞ্জুরি তাকে ছিটকে দেয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। তালহা যে সম্ভাবনাময়ী ছিলো তার আরেকটা প্রমাণ কি জানেন? ক্যারিবীয় সফরগুলোতে দেখবেন, ইয়ান বিশপ বাংলাদেশের বর্তমান ফাস্ট বোলারদের প্রশংসা করার আগে সবসময় মাশরাফি ও তালহা জুবায়েরকে স্মরণ করে। অর্থাৎ সেই ২০০৪ সালে খেলা তালহার স্মৃতি এখনো মনে রেখেছেন ইয়ান বিশপ। অথচ ক্রিকেটার তালহা জুবায়ের আমাদের অনেকের কাছেই অপরিচিত। ✨ এবার একটা আইরনি শুনবেন? এই তালহা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন ২০১৪ পর্যন্ত। ২০১২ সালে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে তালহা এক ম্যাচে প্রথম আট উইকেটের আটটিই তুলে নেন। ওই ম্যাচে দশ উইকেট নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তালহা পারেননি, কারণ বিসিবির নতুন নিয়ম অনুযায়ী কোনো পেসার সর্বোচ্চ ১৫ ওভার বোলিং করতে পারবে, যেনো তাদের উপর ধকল কমে। বিষয়টাকে আইরনি বললাম এই কারণে, যে নিয়ম তাকে ইনংসে ১০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড থেকে থামিয়েছে, এই নিয়মগুলো তালহা জুবায়েরের ক্যারিয়ারের শুরুতে থাকলে হয়তো লিকলিকে গড়নের তালহার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা ওই বয়সেই শেষ হতো না। খেলোয়াড় তালহা জুবায়েরকে দুর্ভাগা বলাই যায়, আমরা ফ্যানরাও দুর্ভাগা যে উনার সার্ভিসটা দেখতে পারিনাই। তবে কোচ হিসেবে তিনি নিজেকে আরো অনেকদূর নিয়ে যাক, এই কামনা করি। সম্প্রতি তিনি চ্যাম্পিয়নন্স ট্রফি উপলক্ষে বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্যাম্পেও যোগ দিয়েছেন। শুভকামনা তালহা জুবায়েরের জন্য। কোচিং ক্যারিয়ারটা যেন খেলোয়াড়ি জীবনের মত না হয়। #তালহাজুবায়ের #কোচতালহাজুবায়ের #TalhaJubair #TalhaJubaer #AndyRoberts #মাশরাফিমর্তুজা #FastBowlers