বাংলাদেশে আত্মহত্যা ও প্রতিরোধ | বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস-২০২৫ | BTF скачать в хорошем качестве

বাংলাদেশে আত্মহত্যা ও প্রতিরোধ | বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস-২০২৫ | BTF

বাংলাদেশে আত্মহত্যা: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। ২০২০ সালে এক তথ্যে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রতি এক লাখে ৩.৮৫ জন আত্মহত্যা করে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২১ সালে ১১,০০০ আত্মহত্যার ঘটনা রিপোর্ট করেছে, যা দেশে একটি উল্লেখযোগ্য আত্মহত্যার সংখ্যা তুলে ধরে। তবে করোনাকালিন এ সংখ্যা হয়েছিল ১৪০০০। বাংলাদেশে আত্মহত্যা মৃত্যুর একটি সাধারণ কারণ এবং একটি দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক সমস্যা। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার কারণে যত লোক মারা যায়, তার মধ্যে ২.০৬শতাংশ বাংলাদেশি। পরিসংখ্যান: সর্বশেষ জরিপ বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার পর দৈনিক সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় আত্মহত্যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আর্থিক সহায়তায় জাতীয় জরিপ (২০২২-ু২৩) সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)-এর জরিপ বলছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ২০ হাজার ৫০৫ জন আত্মহত্যা করেন। প্রতিদিন গড়ে ৫৬ জন দেশের কোথাও না কোথাও আত্মহত্যা করেছেন। প্রতি লাখে আত্মহত্যা করেছেন ১২ দশমিক ৪ জন। ২০১৬ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন ২৩ হাজার ৮৬৮ জন; প্রতি লাখে ১৪ দশমিক ৭ জন। দৈনিক প্রথম আলোর এই বছর ৪ মার্চ প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা যায়, ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী নারীদের এবং ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী পুরুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। শহরের চেয়ে গ্রামে আত্মহত্যার হার বেশি। আত্মহত্যা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে বেকারদের মধ্যে। নারীর আত্মহত্যা: শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০১০ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১০ সালে প্রতি এক লাখে আত্মহত্যা করে ১২৮.০৮ জনের মধ্যে ৮৯শতাংশ ছিলেন নারী এবং তাদের বেশিরভাগই ছিলেন অবিবাহিত। বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থা, জানিয়েছে যে জানুয়ারী ২০১১ থেকে আগস্ট ২০১১ পর্যন্ত ২৫৮ জন আত্মহত্যা করেছেন, যার মধ্যে ১৫৮ জন নারী এবং বাকিরা পুরুষ। শারীরিক ও পারিবারিক সহিংসতার কারণে ্এই উপমহাদেশে পুরুষের তুলনায় নারী বেশি আত্মহত্যা করে । বিশেষজ্ঞরা বলছেন বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি হওয়ার কারণ তাদের সামাজিক মর্যাদা নিম্নমানের। আরেকটি কারণ হল নিরক্ষরতার উচ্চ হার এবং পুরুষের ওপর তাদের অর্থনৈতিক নির্ভরতা।                   তরুণদের আত্মহত্যা: ১৫-২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ আত্মহত্যা । ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে রেকর্ড সংখ্যক আত্মহত্যা করে। ওই বছরে ৫ দিনে ৩ জনের আত্মহত্যার পর ৭ দিনের মাথায় আরো একজন আত্মহত্যা করে। এই উদাহরণই এদেশে তরুদের আত্মহত্যার ভয়াবহ এক চিত্র উপস্থাপন করে। ওই বছর কয়েকটি আত্মহত্যা করা তরুণ-তরুণীর নাম উল্লেখ করা হলো : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ আত্মহত্যা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ছাত্র তরুণ হোসেন।- ১৫ আগস্ট ২০১৮ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সংগীত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মুশফিক বাবু ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ঢাবি’র দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪র্থ বিভাগের জাকির হোসেন । ১২ নভেম্বর ২০১৮ রাজধানীর ফার্মগেটের একটি হোস্টেল থেকে ঢাবি’র বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের ফাহমিদা রেজা সিলভির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ১৪ নভেম্বর ২০১৮: রাজধানীর আজিমপুওে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যায়  হোম ইকোনোমিক্স কলেজের পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষেও ছাত্রি লায়লা আঞ্জুমান ইভা। ১৬ নভেম্বর ২০১৮: ঢাবির ইংরেজি বিভাগের সাবেক ছাত্রি মেহের নিগার দানি ২২ নভেম্বর ২০১৮: ২০১৪-১৫ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রি হুজাইফা রশিদ রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যা। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় অর্পিতা মাতুব্বর (১৬), সর্বোপরি ২০১৪ সালে মনমন- মুহাম্মাদ ভাই-বোনের আত্মহত্যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়। আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। কেউ যদি আত্মহত্যার দিকে এগোয় তাকে সূস্থ করে তোলায় রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। আত্মহত্যাকে জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। আত্মহত্যা রোধে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে আত্মহত্যা প্রতিরোধে একটি কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। একটি সুন্দর সামাজিক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।   ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশন (বিটিএফ)-এর লক্ষ্য আত্মহত্যামুক্ত একটি সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশন (বিটিএফ) ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশন (বিটিএফ)-এর লক্ষ্য শিশু, কিশোর এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের প্রভাবিত করে এমন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলো মধ্যে অন্যতম  চ্যালেঞ্জ মানসিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলা করাসহ আত্মহত্যা প্রতিরোধের অন্যান্য কারণগুলো মোকাবিলা করা। ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশন শিশু এবং তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যা এবং এর প্রবণতা প্রতিরোধের জন্য ভিত্তি ত্বরান্বিত এবং শক্তিশালী করার জন্য নিবেদিত। বিশেষত অনুশীলন ও অ্যাডভোকেসিতে নিযুক্ত ব্যক্তির আন্তর্জাতিক জ্ঞান বিনিময়কে উৎসাহিত করে, একাডেমিক গবেষণা, নীতি উন্নয়নে কাজ করে। পেশাদারদের মধ্যে জ্ঞান ভাগাভাগির জন্য দেশীয় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। আত্মহত্যা থেকে ফিরে আসা জীবিত ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমে গবেষণার মান এবং প্রভাবকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের অন্যতম লক্ষ্য তরুণ ও যুব আত্মহত্যা এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে পরবর্তী প্রজন্মের আগ্রহিদের অনুপ্রাণিত করা এবং টিকিয়ে রাখা। সংকটে তরুণদের সহায়তা করার জন্য আরও প্রমাণ-ভিত্তিক এবং সহানুভূতিশীল পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করার ক্ষেত্রে ব্রাইটার টুমোরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। #suicideprevention #suicidepreventionday #suicidepreventionawareness